• এবার একাদশে ভর্তিতে যুক্ত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা

    এবার একাদশে ভর্তিতে যুক্ত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা

    একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালায় যুক্ত হতে যাচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবার থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা পাবেন এই বিশেষ কোটা। এরইমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এমন একটি সুপারিশ পাঠিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে ২০২৫ সালের একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম থেকেই কার্যকর হবে এই বিশেষ কোটা। 

    বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ এই কোটা প্রস্তাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে শহীদদের সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের। বর্তমানে কলেজ ভর্তির নীতিমালায় মোট ৭ শতাংশ কোটা রয়েছে, যার মধ্যে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দপ্তরের জন্য বরাদ্দ। আবার কলেজ পর্যায়ে বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। নাতি-নাতনিদের কোটাও উচ্চ আদালতের রায়ে বাতিল হয়েছে। তাই বিদ্যমান কোটাব্যবস্থার বাস্তবতা পর্যালোচনা করে একে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হচ্ছে।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে বোর্ডের এক পরিদর্শক বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানেরা এখন কলেজ পর্যায়ে তেমন নেই বললেই চলে। বাস্তবসম্মত ও ঐতিহাসিক ভিত্তিতে নতুন কোটার দরকার ছিল। এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একাদশ শ্রেণির ভর্তি নীতিমালায় আরও বেশ কিছু সংস্কার আসতে যাচ্ছে। 

    আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেন, ২০২৫ সালের একাদশ শ্রেণির ভর্তি নীতিমালায় বেশ কিছু বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। কোটাব্যবস্থা, মেধাক্রম অনুযায়ী অগ্রাধিকার, মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া এবং বেসরকারি কলেজগুলোর সংকট বিবেচনায় খসড়া তৈরি করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

    এছাড়া, নতুন নিয়মে ভর্তি কার্যক্রমে সময়সীমা নির্ধারণ, কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার প্রতি উৎসাহ এবং কমমানের কলেজগুলোর সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

    ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। ব্যানবেইস ও শিক্ষা বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণির জন্য আসন রয়েছে প্রায় ২২ লাখ। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে আরও ৯ লাখ আসন রয়েছে এবং সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে রয়েছে প্রায় ২ লাখ ৪১ হাজার আসন। সব মিলিয়ে দেশে একাদশে ভর্তিযোগ্য আসনের সংখ্যা প্রায় ৩৩ লাখ ২৫ হাজার। ফলে দেখা যাচ্ছে, এবার কলেজ পর্যায়ে সাড়ে ২০ লাখেরও বেশি আসন খালি থাকবে। 

    শিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহেই শুরু হবে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ। তিনটি ধাপে আবেদন ও মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।

  • আজ থেকে সারা দেশে চিরুনি অভিযানের ঘোষণা…

    আজ থেকে সারা দেশে চিরুনি অভিযানের ঘোষণা…

    অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে আজকে থেকেই দেশব্যাপী চিরুনি অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

    রোববার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

    উপদেষ্টা বলেন, খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যে কোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণসহ সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। 

    কবে থেকে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা শুরু আজ থেকেই। জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী যে কোনো কার্যক্রম কঠোর হাতে দমন করবে সরকার।

    এছাড়া পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

    তিনি বলেছেন, মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

    এই হত্যা মামলায় রাজনৈতিক বা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও  সাফ জানিয়ে দেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

  • জরুরি অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নয়, লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

    জরুরি অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নয়, লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

    জরুরি অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নয়, লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন
    জরুরি অবস্থা যেন আর রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না হয়, সে লক্ষ্যে নতুন বিধান সংযোজনের বিষয়ে একমতে পৌঁছেছে রাজনৈতিক দলগুলো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে। 

    রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় দলগুলো।

    জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘১৪১ এর ‘ক’ এর ‘১’ ধারা মতে রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি-অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে, যা যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যেকোনো অংশের নিরাপত্তার বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হলে তিনি অনধিক নব্বই দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করিতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার পূর্বেই মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।’

    বিদ্যমান সংবিধানে ১২০ দিনের কথা বলা আছে। একই সঙ্গে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষর প্রয়োজন হবে।

    জরুরি অবস্থা নিয়ে গত ৭ ও ১০ জুলাই আলোচনা হয়। তার প্রেক্ষিতে রোববারের আলোচনায় বলা হয়, বিদ্যমান ১৪১ (ক) সংশোধনের সময় অভ্যন্তরীণ গোলযোগের শব্দগুলোর পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার প্রতি হুমকি বা মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন হবে। জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করা। ওই সময়ে নাগরিকের দুটো অধিকার অলঙ্ঘনীয় করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৪৭ (৩) এর বিধান সাপেক্ষে কোনো নাগরিকের জীবন অধিকার, নির্যাতন ও নিষ্ঠুর, অমানবিক বা মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি হইতে রক্ষা পাইবার অধিকার খর্ব করা যাবে না।

    সংলাপে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিমত দেখা যায়।

    বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মন্ত্রিসভার পরিবর্তে সর্বদলীয় বৈঠক হতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব করেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আহমদ আবদুল কাদের মন্ত্রিসভার সঙ্গে বিরোধীদলকে যুক্ত করা প্রস্তাব দেন। আলোচনার একপর্যায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জরুরি অবস্থা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা নেত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিতের প্রস্তাব করেন। যাতে সমর্থন জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বিরোধীদলীয় নেতা না থাকলে কে উপস্থিত থাকবেন তা নিয়ে কথা বলেন। তিনি সে সুযোগ রাখার প্রস্তাব করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, বিরোধীদলীয় উপনেতাও মন্ত্রী পদমর্যাদার।

    সবশেষে সিদ্ধান্ত হয়, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করা। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বা নেত্রী বা তার অনুপস্থিতিতে বিরোধীদলীয় উপনেতা উপস্থিত থাকবেন।

  • সারা দেশে আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে: আইজিপি

    সারা দেশে আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে: আইজিপি

    বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, সারা দেশে বিশেষ করে ঢাকায় আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
    শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে পুরান ঢাকার মিল ব্যারাকে অবস্থিত ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন ও ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।

    বাহারুল আলম বলেন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা দরকার।

    তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর এখনও পুলিশ বাহিনীর মনোবল দুর্বল। যার ফলে তারা শতভাগ কাজ করতে পারছে না। 

    এর আগে, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতির দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে না।

    প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতাল কম্পাউন্ডে চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এরপর তার মরদেহের ওপর চলে বর্বরতা। 

    এ ঘটনায় নিহতের বোন ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।