সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ অনেক মারাত্মক রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক মানুষই অনিদ্রায় ভোগেন। যার কারণে তারা সারা রাতই শুধু এপাশ-ওপাশ করতে থাকেন।
অনেকের আবার ঘুম আসে, কিন্তু বারবার ভেঙেও যায়। এই সমস্যা এড়াতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন কিছু উপকারী খাবার, যা খেলে রাতে ভালো ঘম হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবদেহ সুস্থ রাখতে ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাপ্তবয়স্কদের রাতে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ভালো ঘুম হওয়া উচিত।
আমাদের শরীরে অনেক রাসায়নিক, অ্যামিনো এসিড, এনজাইম, পুষ্টি ও হরমোন একসঙ্গে কাজ করে ভালো ঘুমের প্রচার করে এবং ঘুমের চক্রকে উন্নত করে। ট্রিপটোফ্যান, মেলাটোনিন, সেরোটোনিনসহ অনেক হরমোন ভালো ঘুম পেতে সাহায্য করে। অনেক খাবারেই প্রচুর পুষ্টি থাকে, যা শরীরে ভালো হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে এবং সারা রাত বিশ্রামের ঘুম পেতে সাহায্য করে। তবে বিশেষ কিছু খাবার আছে, যা আপনার এই সমস্যা সমাধান করবে।
১. রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম দুধ পান করুন। গরম দুধ অনিদ্রার সমস্যা মেটানোর ঘরোয়া প্রতিকার। দুধে চারটি যৌগ রয়েছে, যা ঘুমের উন্নতি ঘটায়। যেমন- ট্রিপটোফ্যান, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও মেলাটোনিন। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করলে আপনি আরাম অনুভব করতে পারেন।
আয়ুর্বেদে রাতের সময়কে দুধ পানের সেরা সময় বলে মনে করা হয়।
২. আখরোটে ঘুম বাড়ানোর মতো কিছু যৌগ আছে। এতে মেলাটোনিন, সেরোটোনিন ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান রয়েছে, যা ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। আখরোটে মেলাটোনিনের পরিমাণ বেশি। তবে গবেষকরা এখনো এই বাদাম খাওয়া এবং ভালো ঘুমের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট যোগসূত্র প্রমাণ করতে সক্ষম হননি।
৩. রাতে ঘুমানোর আগে বাদাম খেলেও আপনার শান্তিতে ঘুম হয়। বাদামে ভালো পরিমাণে মেলাটোনিন থাকে। এটি একটি হরমোন, যা ঘুম ও জেগে ওঠার চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বাদাম ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। এটি পেশি শিথিল করে এবং ঘুমের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে।
৪. চেরিতে ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী চারটি ভিন্ন যৌগ রয়েছে। যেমন- মেলাটোনিন, ট্রিপটোফ্যান, পটাশিয়াম ও সেরোটোনিন। গবেষকদের মতে, চেরিতে থাকা পলিফেনল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলোও ঘুমের উন্নতি করতে পারে। তাই চেরিও ঘুমানোর আগে একটি ভালো খাবার হতে পারে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘ই’ রয়েছে। এ ছাড়া অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিউই ফল খাওয়া রাতে শান্তিপূর্ণ ঘুম পেতে সাহায্য করে। কিউই এবং ঘুমের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।